শ্রমিক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০

সাভারের আশুলিয়ায় বিক্ষোভের জেরে শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় দুইজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৩০ শ্রমিক আহতের খবর পাওয়া গেছে।

ভাঙচুর করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত পাঁচটি গাড়ি।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের জিরাবো এলাকার মন্ডল গ্রুপের সামনে এ ঘটনা ঘটে।  

প্রাথমিকভাবে আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক হাবীব ও ন্যাচারাল ইন্ডিগো কারখানার শ্রমিক নাজমুল হাসান। বাকি আহতদের পরিচয় জানা যায়নি।  

শ্রমিকরা জানান, সকালে মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ, শ্রমিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্রিপক্ষীয় মিটিং চলছিল। এসময় সমঝোতা না হওয়ায় শ্রমিকরা কারখানার বাইরে অবস্থান নেন। পরে অন্যান্য কারখানার শ্রমিক সেখানে জড়ো হতে থাকেন। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থান নিলে শ্রমিকরা র‌্যাব ও পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেন।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ শুরু করেন। পরে শ্রমিকরা আরও উত্তেজিত হলে পুলিশ গুলি চালায়। এ সময় দুইজন গুলিবিদ্ধ হলে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় পিএমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লাঠিচার্জে অন্তত ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।

ন্যাচারাল ডেনিমসের শ্রমিক সুমন বাংলানিউজকে বলেন, সকালে আমাদের কারখানায় সবাই কাজ করছিলাম। আমাদের কারখানায় কোনো ধরনের আন্দোলন হয়নি। তবে মন্ডল গ্রুপের শ্রমিকরা কারখানার সামনে আন্দোলন শুরু করলে আমাদের শ্রমিকরা সংহতি জানিয়ে মন্ডলের সামনে যান। সেখানে আরও কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা যোগ দেন। এসময় শ্রমিকদের লাঠিচার্জ শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। একপর্যায়ে গুলি ছুড়লে দুই জনের পায়ে গুলি লাগে। পরে আমি তাদের দুইজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। এছাড়া প্রায় ৩০ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পিএমকে হাসপাতালের অ্যাডমিন ম্যানেজার নাজিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে চার জন শ্রমিককে আহত অবস্থায় আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই জনের পায়ে গুলি লেগেছে।  

তাদের চিকিৎসা চলছে বলেও জানান তিনি।  

ন্যাচারাল ডেনিম কারখানার এইচআর অ্যাডমিন সবুজ হাওলাদার বলেন, আমাদের কারখানায় সকাল থেকেই শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করছিলেন। হঠাৎ শ্রমিকদের কাছে গুজব আসে, পাশের মন্ডল গার্মেন্টসের শ্রমিক মারা গেছেন। এটা শুনেই সব শ্রমিক একসঙ্গে কারখানা থেকে বেরিয়ে মন্ডল গার্মেন্টসের সামনে চলে যান।  

এ ব্যাপারে শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

Copyright © priyokagoj.com All Right Reserved.
Developed By Monoputo