মেয়েদের স্তনের নিচের দিকের ভাঁজে প্রায়ই ছত্রাকের সংক্রমণ হতে দেখা যায়। এ সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যেতে লজ্জা ও দ্বিধায় ভোগেন অনেকে। সে কারণে সমস্যাটি নিয়ে অকারণেই কষ্ট ভোগ করেন তাঁরা।
সাধারণত শরীরের ভাঁজগুলোয় ত্বক আর্দ্র ও ভেজা থাকায় ছত্রাকের সংক্রমণের শিকার হয় বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ সংক্রমণের কারণ ক্যানডিডা নামের একধরনের ছত্রাক। এটি একধরনের ইস্টজাতীয় ছত্রাক, যা উষ্ণ ও আর্দ্র স্থান বেছে নেয়। স্তনের নিচের ভাঁজ ছাড়া বগল ও ঊরুর ফাঁকেও এই সংক্রমণ হতে পারে।
ক্যানডিডার সংক্রমণ হলে ত্বকে উজ্জ্বল লালচে দানা বা র্যাশ দেখা দেয়। এগুলোয় জ্বলুনি ও চুলকানি হয়। এমনকি দানাগুলো ফুসকুড়ির আকার নিতে পারে ও ফেটে যেতে পারে। সংক্রমণের চারদিকের ত্বক শুষ্ক ও ফাটা থাকতে পারে।
যেসব কারণে স্তনের নিচের দিকের ভাঁজে ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে, সেগুলো হলো:
অতিরিক্ত আঁটসাঁট বা আধা ভেজা বা ঘামে ভেজা অন্তর্বাস পরা। অন্তর্বাস পরিবর্তন না করা।
অতিরিক্ত বড় স্তনের কারণে ভাঁজ বেশি হওয়া।
জায়গাটা সারাক্ষণ ঘামে ভেজা থাকা।
ব্রেস্ট প্যাডের ব্যবহার।
স্থূলকায় নারীদের।
অন্তঃসত্ত্বাকালীন রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গেলে।
ডায়াবেটিস থাকলে বা দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন করলে।
সাধারণত রোগ শনাক্ত করার জন্য কোনো পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না। তবে ছত্রাকের ধরন শনাক্ত করতে কখনো ত্বক থেকে সামান্য কোষ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়। এ সমস্যার চিকিৎসায় সাধারণত বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম ব্যবহার করতে বলা হয়।
চুলকানি কমানোর জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন খাওয়া যায়। জায়গাটা শুষ্ক রাখতে ড্রাই পাউডার ব্যবহার করা যায়। সমস্যা তীব্র হলে অনেক সময় মুখে খাবার অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ লাগাতে হতে পারে। তবে যা–ই লাগুক, তা চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যবহার করা উচিত।
সুতির ও আরামদায়ক সঠিক মাপের পরিষ্কার অন্তর্বাস পরবেন। প্রতিদিন পরিবর্তন করবেন। রাতে অন্তর্বাস পরে ঘুমাবেন না। রোজকার ব্যবহার্য অন্তর্বাস বাড়িতে ফিরে গরম সাবান–পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
যাঁরা ব্রেস্ট প্যাড ব্যবহার করেন, তাঁরা এগুলো নিয়মিত বদল করে পরবেন। রিইউজেবল (পুনরায় ব্যবহারযোগ্য) প্যাড হলে ধুয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ডিসপোজেবল হলে নিশ্চিত করুন যে এতে যেন ওয়াটারপ্রুফ লাইনার না থাকে।
ওজন কমান।
ডায়াবেটিস থাকলে নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
পুষ্টিকর খাবার খান।
অধ্যাপক মো. আসিফুজ্জামান, বিভাগীয় প্রধান, চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ