বগুড়ায় পাখি খাদ্য খেরাছির বাম্পার ফলন

বগুড়া সারিয়াকান্দিতে যমুনার পতিত জমিতে এ বছর খেরাছির (চিনা) বাম্পার ফলন হয়েছে। পোষাপাখি এবং পশুখাদ্য হিসেবে চাহিদা বাড়ায় ও ভাল দাম পাওয়ায় চলতি বছর অধিক জমিতে খেরাছির চাষ করেছেন চাষিরা। বগুড়া শহর ও উপজেলা পর্যায়ে পোষা পাখি প্রেমিকের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে খেরাছির চাহিদাও সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা যায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা বাঙালি এবং যমুনা নদী বিধৌত বলে মাটি বেলে দোঁয়াশ। এ মাটিতে প্রায় সব ধরনের ফসল ভাল হয়। আর যমুনা নদী ও বাঙালি নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে ও পতিত জমিতে এবার চাষিরা উল্লেখযোগ্য হারে খেরাছি চাষ করেছে। পশুখাদ্য এবং পাখির খাদ্য হিসেবে খেরাছি ব্যবহার হয়। বর্তমান সময়ে পাখি খাদ্য হিসেবে সবচেয়ে বেশি চাহিদা হয়েছে খেরাছির। তাই অন্যান্য ফসলের তুলনায় এর কদরও বেশি। ফলে এর দামও বেশি। সঙ্গত কারনেই কৃষকরা এখন তাদের অর্থকরী ফসলের তালিকায় রেখেছেন খেরাছিকে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধাপগ্রামের কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, গত বছর আমি খেরাছি চাষ করে ভাল লাভবান হয়েছিলাম। দামও ভাল পেয়েছিলাম। প্রতি মণ খেরাছি ৩ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। খেরাছিতে কোন বাড়তি খরচ নেই। শুধুমাত্র জমি চাষ করে বপন করে রাখলেই হয়। কোন নিড়ানি দেয়া লাগে না। বপন করার পর শুধুমাত্র ফসল কর্তন করতে জমিতে যেতে হয়। তবে মাঝে একবার সেচ দিতে পারলে ভাল ফলন হয়। গত বছর ১ বিঘা জমিতে আমি ৫ মণ খেরাছি পেয়েছি। এ বছরও খেরাছি লাগিয়েছি। ফলন মোটামুটি ভাল হয়েছে। 
একই গ্রামের কৃষক বাক্কার মিয়া জানান, এ বছর ৯০ শতক জমিত খেরাছি চাষ করছি। ফলন মোটামুটি ভাল হয়েছে। দামও ভালই শোনা যাচ্ছে। আশা করি ভাল আয় হবে।

সারিয়াকান্দি বাজারের মজুদ ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ জানান, এখন সিজন টাইম, তাই খেরাছির দাম একটু কম আছে। তাও ২ হাজার ৮০০ টাকা হতে ৩ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত খেরাছি কেনাবেচা হচ্ছে। সিজন টাইম বাদে ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত খেরাছি বাজারে বিক্রয় হয়।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, গত বছর ৫০ হেক্টর জমিতে ৫২ মেট্রিকটন খেরাছী ( চিনা) উৎপাদন হয়েছিল। এ বছর খেরাছির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫০ হেক্টর অর্জন হয়েছে ৭৫ হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় ২৩ হেক্টর বেশি।

সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হালিম বলেন, পাখিখাদ্য হিসেবে খেরাছির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই অন্যান্য ফসলের তুলনায় এর দামও তুলনামূলক বেশি। ফলে কৃষকরা এখন খেরাছির (চিনা) চাষের প্রতি অধিক হারে ঝুঁকে পরেছেন।

Copyright © priyokagoj.com All Right Reserved.
Developed By Monoputo