ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রায় দুই সপ্তাহ পরে ঢাকার বেইলি রোডের আগুনে মারা যাওয়া নারী সাংবাদিকের আসল পরিচয় জানা গেছে। রোববার রাতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) জানিয়েছে, সাংবাদিক মহলে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী হিসাবে পরিচিত হলেও ওই নারী সাংবাদিকের প্রকৃত নাম বৃষ্টি খাতুন।
কুষ্টিয়ায় জন্ম নেয়া বৃষ্টি খাতুনের পিতা সাবলুল আলম এবং মা বিউটি খানম।
তার পরিচয় প্রকাশের পর রমনা কালী মন্দিরের কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিচয় গোপন রেখে কেন তিনি মন্দিরে পূজা করতে আসতেন, তারা সেটির তদন্ত চান।
সোমবার কালী মন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বিবিসি বাংলাকে বলেন, তার পরিচয় প্রকাশের পর আমাদের মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে। যে কোন ধর্মের যে কেউ মন্দিরে যেতে পারে। কিন্তু বৃষ্টি খাতুন কেন পরিচয় গোপন রেখে মন্দিরে যেতেন সেটা নিয়ে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। আমরা চাই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা উচিত।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের অগ্নি দুর্ঘটনার নিহত হওয়ার পর সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী বা বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় নিয়ে অস্পষ্টতা তৈরি হয়।
‘অভিশ্রুতি শাস্ত্রী’ নামে পরিচিত সাংবাদিক কাজ করতেন ‘দ্যা রিপোর্ট ডট লাইভ’ নামের একটি নিউজ পোর্টালে। ঢাকায় তিনি সনাতন ধর্মের রীতি-নীতি অনুসরণ করতেন বলে পরিচিতরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে মরদেহ শনাক্তের পর গত পহেলা মার্চ কুষ্টিয়ার সাবরুল আলম সবুজ নিজেকে ঐ নারী সাংবাদিকের পিতা দাবি করেন। ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে তার নাম বৃষ্টি খাতুন বলে দেখতে পেয়ে লাশ হস্তান্তরের উদ্যোগ নিয়েছিল পুলিশ।
এমন প্রেক্ষাপটে আসল পরিচয় শনাক্ত না করে তার মরদেহ হস্তান্তর না করার জন্য অনুরোধ করে রমনা কালী মন্দিরের কর্তৃপক্ষ। এরপরে পুলিশ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “ডিএনএ টেস্টের রিপোর্টে বাবা মায়ের দেয়া নমুনার সাথে মিল পাওয়া গেছে”।
তবে, বৃষ্টি খাতুনের বাবা সাবরুল আলম সবুজ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “রিপোর্ট কী আসবে সেটা তো অজানা কিছু না। আমরা সবাই মেয়ের মরদেহ নেয়ার জন্য ঢাকায় অপেক্ষা করছি”।
সিআইডি ডিএনএ টেস্টের এই রিপোর্টের কথা গণমাধ্যমকে জানালেও পুলিশ বলছে তাদের হাতে এখনো এই রিপোর্ট আসেনি ।
রমনা থানার ওসি উৎপল বড়ুয়া বিবিসি বাংলাকে বলেন, “রিপোর্টের কাগজ হাতে না পেলে আমরা কোন ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারবো না”।