আর পানি সংকটে ভুগতে হবে না মহাকাশচারীদের। তাদের প্রস্রাব ও গায়ের ঘাম থেকেই এবার খাবার পানি তৈরি করবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা। সেই পানি পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ ও সুস্বাদু হবে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পানির চাহিদা মেটাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে নাসা। বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার ব্রাউন বলেন, প্রস্রাব থেকে তৈরি পানি এতটাই বিশুদ্ধ হবে যে, সেটি মহাকাশচারীদের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো হবে।
চলতি সপ্তাহে নাসার নিজস্ব ওয়েবসাইটের খবরে বলা হয়েছে, সংস্থাটির এনভায়রনমেন্ট কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম (ইসিএলএসএস) বিশেষ প্রক্রিয়ায় মহাকাশচারীদের প্রস্রাব ও গায়ের ঘাম বিশুদ্ধ করে তা থেকে পানি তৈরি করছে। এনভায়রনমেন্ট কন্ট্রোল অ্যান্ড লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম হলো কম্পিউটার হার্ডওয়ার সিস্টেম যাতে নানারকম অ্যালগোরিদম ও টেকনোলজি আছে।
ওয়াটার রিকভারি সিস্টেমও আছে, যা বর্জ্য থেকে পানি তৈরি করতে পারে। এই প্রক্রিয়াটি করা হয় ওয়াটার প্রসেস অ্যাসেম্বলি দিয়ে। এমনকি মানুষের ত্বক থেকে বের হওয়া ঘাম, নাকের নিঃশ্বাসও বিশুদ্ধ করতে পারে এই সিস্টেম। নাসা জানিয়েছে, তাদের কাছে আছে আরও একটা সিস্টেম, যার নাম ইউরিন প্রসেসর অ্যাসেম্বলি। এই সিস্টেম প্রস্রাবকে বিশুদ্ধ করে। এই সিস্টেমের ভ্যাকিউম ডিস্টিলেশন প্রস্রাবকে প্রায় ৯৮ শতাংশ বিশুদ্ধ করে খাবার পানি তৈরি করতে পারে।
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সহজে পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়। সবই পৃথিবী থেকে নিয়ে যেতে হয় মহাকাশচারীদের। সেখানে মধ্যাকর্ষণও নেই। মহাকাশচারীদের খাবারের চাহিদা মেটাতে মহাকাশেই ফসল ফলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সারাদিন কম করে হলেও এক গ্যালন পানি লাগে মহাকাশ স্টেশনে। মহাকাশচারীদের খাওয়া, রান্নাবান্না, হাত-মুখ ধোয়া সবই আছে। এত পানি কোথায় থেকে আসবে! নাসার বিজ্ঞানীরা তাই ঠিক করেছেন, মহাকাশচারীদের প্রস্রাব থেকেই তৈরি হবে খাবার পানি। মহাকাশে কোনো কিছুই ফেলার নয়। এমন শূন্য মধ্যাকর্ষণে (জিরো গ্র্যাভিটি) পৃথিবীর মতো বিলাসিতা সেখানে চলবে না। তাই সবকিছুকেই রিসাইকেল করতে হবে। প্রস্রাব, গায়ের ঘামও বাদ যাবে না।