মাঠেই নষ্ট হচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন

ঘূর্ণিঝড় আসানির প্রভাবে নওগাঁয় বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে জেলার বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় অনেক কৃষকেই মাঠ থেকে ফসল কেটে ঘরে তুলতে পারেননি। ফলে উৎপাদিত ধান নিয়ে চরম হতাশার মধ্যে পড়েছেন ধান চাষিরা। 

ধামইরহাট উপজেলার আড়ানগর গ্রামের কৃষক রেজোয়ান আলী। তিনি এ বছর বোরো ধান চাষ করেছেন ১০ বিঘা জমিতে। প্রতি বিঘায় বীজ, চাষ, সার, কীটনাষক ও শ্রমিকসহ তার খরচ হয়েছে ৮ হাজার টাকা। জমিতে সেঁচ বাবদ আরও দিতে হবে ৪ মন ধান। 

তিনি জানান, গড়ে প্রতি বিঘা জমিতে ধান হয়েছে ১৮ মন। ধান কাটা ও মাড়ায় করতে শ্রমিককেই দিতে হয়েছে উৎপাদনের অর্ধেক ৯ মন ধান। বাঁকি ৫ মন ধান রয়েছে তার গোলায়। যা দিয়ে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ মেটানো সম্ভবনা তার পক্ষে।

আবুল হোসেন, মোয়াজ্জেম আলী ও রেজোয়ান আলীসহ অনেক কৃষক জানান, এবছর বোরো ধানের উৎপাদন খরচ তোলা কোন ভাবেই সম্ভব না। তবুও অধিক মজুরি দিয়ে মাঠ থেকে ধান তুলতে হচ্ছে। শ্রমিককে দিয়ে যা পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে কিছুটা উৎপাদন খরচ উঠছে। তা না হলে পুরোটাই ক্ষতি। 

শ্রমিকরা জানান, ধান মাটিতে শুয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও পানিতে ভাসছে ধান। এমন অবস্থায় ধান কাটতে অনেক সময় লাগছে। ফলে বাড়তি মজুরি নিতে হচ্ছে। বিগত বছর গুলোতে এক বিঘা জমির ধান কাটতে শ্রমিক লেগেছে ৩ থেকে ৪ জন। আর এ বছর সেখানে লাগছে ৭ থেকে ৮ জন।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শামছুল ওয়াদুদ বলছেন, চলতি মৌসুমে নওগাঁয়  ১ খাল ৮৯ হাজার ৪শ ৯০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১২ লাখ মেট্রিক টন। পুরো জেলায় এক সঙ্গে ধান কাটা মাড়ায় শুরু হওয়ায় কিছুটা শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষতি থেকে রেহায় পেতে আগামীতে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি কিনতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Copyright © priyokagoj.com All Right Reserved.
Developed By Monoputo