ইসরায়েল গতকাল সোমবার বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে আরও ১১ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা নিরাপদে ইসরায়েলে পৌঁছেছেন।
গাজায় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও দুই দিন বাড়ানোর ঘোষণা আসার কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েল এই তথ্য জানাল।
যুদ্ধবিরতির বর্ধিত ঘোষণা অনুযায়ী, আজ মঙ্গল ও কাল বুধবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল হামলা চালাবে না। এ ছাড়া এই দুই দিনে নিজেদের মধ্যে আরও জিম্মি-বন্দিবিনিময়ে রাজি হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল।
১১ জিম্মির আগমন নিশ্চিত হওয়ার পর আজ মঙ্গলবার ভোরে ইসরায়েলের কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত অনুযায়ী গত রাতে ৩৩ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ১৫০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিল ইসরায়েল। আর হামাস মুক্তি দিয়েছে প্রায় ৫০ জন জিম্মিকে।
কাতার, মিসর, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত বুধবার যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় হামাস ও ইসরায়েল। শুক্রবার থেকে শুরু হয় চার দিনের যুদ্ধবিরতি, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল গতকাল সোমবার।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ছে বলে গতকাল প্রথম নিশ্চিত করে কাতার।
মেয়াদ শেষ হওয়ার কিছু আগে হামাস যুদ্ধবিরতি ৪৮ ঘণ্টা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। তবে তখন তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেনি ইসরায়েল।
যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, যুদ্ধের অন্ধকারের মধ্যে এই পদক্ষেপ মানবতা ও আশার একটি ঝলক।
গতকাল রাতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী ঘোষণা করে, গাজা থেকে মুক্তি পাওয়া ১১ জিম্মি ইসরায়েলি ভূখণ্ডে রয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তি পাওয়া ব্যক্তিরা স্বদেশে ফিরলে তাঁদের স্যালুট জানানো হয়। আলিঙ্গন করা হয়। তাঁরা যতক্ষণ না পর্যন্ত পরিবারের সঙ্গে মিলিত হচ্ছেন, ততক্ষণ তাঁদের সঙ্গে থাকবে ইসরায়েলি বাহিনী।
কাতারের তথ্য অনুযায়ী, মুক্ত হওয়া ইসরায়েলিরা ফ্রান্স, জার্মানি ও আর্জেন্টিনার দ্বৈত নাগরিক।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের ভাষ্যমতে, হামাসের এ হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে হামাস।
জবাবে ৭ অক্টোবর থেকে গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছিল ইসরায়েল। পাশাপাশি তারা গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছিল। গাজার হামাস সরকারের তথ্যানুযায়ী, অবরুদ্ধ উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাঁদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোকজন। নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে কয়েক হাজার শিশু রয়েছে।