প্যারিস রোডে দেখা

ক্যালেন্ডারে ১০ নভেম্বর, ১৯৯৯
ভোর ৬'টায়- দুজনের প্রথম দেখা হবে
চিঠিতে লিখেছিলে- ভিসির বাসভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে
ধবধবে সাদা পাঞ্জাবী পরে
খোপার জন্য কৃষ্ণচূড়া ফুল আর
বকুল ফুলের মালা নিয়ে দাঁড়াতে।
তখনও প্রেমিক হয়ে উঠতে পারি নি।
ডায়রীর পাতা ছিঁড়ে ছিঁড়ে
লিখতাম পাতার পর পাতা চিঠি, কবিতা আর গান।

চামেলী, চম্পা আর নাম না জানা অনেক মেয়েকে
ভালোবাসতে পারি নি কেবল সাহসের অভাবে।
বলতে পারি নি--আমিও ভালোবাসি।
অথচ সাত সকালে তোমার চিঠির ভাষায়
পুরোটা প্যারিস রোড এপাশ থেকে ওপাশ হেঁটে চলেছি শত-সহস্রবার !
তোমাকে প্রথম দেখবো বলে বেড়েছে হার্টবিট
মাত্রা অতিক্রম করেছে রোমাঞ্চের পারদ
কাঁপা কাঁপা গলায় শ্রীকান্ত আচার্য্যের গান
কিভাবে বরণ করে নিবো তার হাজারো রিহ্যার্সেল
প্রথমে কি বলবো, কি নামে ডাকবো; তুমি না আপনি
বকুল ফুলের মালা কি তোমার হাতে দেবো না পরিয়ে দেবো;
তোমার ড্রেসের রং যদি সাদা হয়; তাহলে বলবো মনের মিল
যদি হয় কালো; তো বলবো আমরা সাদা-কালো
যদি পরো নীল; তবে বলবো আমার প্রিয় নীল; জানলে কি করে!
যদি পরো গোলাপী বলবো প্রিয় ফুল গোলাপ
মনের মধ্যে এঁকেছিলাম এরকম শতশত আলাপ।

হঠাৎ আমার পেছনে কাঁধে হাত
সে বলে-কখন এলে?
তখনও ঘোর কাটে নি।
কথা গেলো আটকে, শুনশান নিরাবতা
গগনশিরীষ গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে পড়ছে শিশিরের ফোঁটা
শুধু দেখছি একটা বেগুণী রং এর শাড়ী
বেণী করে চুল বাঁধা, চোখে কাজল, কপালে টিপ
হাতে কয়েক রং এর গ্লাডিওলাস ফুল
কি অদ্ভূত মায়াবী দৃষ্টি, স্রষ্টার সৃষ্টি !
এবার বলে--চিঠি দিতে কৃপণতা কেনো !
নাকি অনেককেই লেখো, তাই সময় পাও না !
চুপ কেনো ! কিছু একটা বলো !!
মুখ ফসকে বলে দিলাম--ভালবাসি।

Copyright © priyokagoj.com All Right Reserved.
Developed By Monoputo